নুরুল করিম বাবলু নামে এক ব্যক্তিকে জিম্মি করে তার স্ত্রীকে পালাক্রমে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) দিবাগত রাতে ফেনী সদর উপজেলার পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নের মাথিয়ারা গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটেছে। বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) দুপুরের দিকে ফেনী মডেল থানায় ভুক্তভোগী নারী অভিযোগ দেওয়ার পর বিষয়টি জানাজানি হয়।
অভিযুক্তদের মাঝে মাথিয়ারা গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ছেলে কামরুল ইসলাম (৩৮), জয়নাল আবেদীনের ছেলে মহিম (৩৫) ও রকি (২২) নামের এক ব্যক্তির নাম রয়েছে।
প্রধান অভিযুক্ত কামরুল ইসলাম নিজেকে যুবদল কর্মী দাবি করে পুরো ঘটনাটি রাজনৈতিকভাবে সাজানো মিথ্যাচার বলে দাবি করেছেন।
থানায় অভিযোগ ও ভুক্তভোগী জানায়, প্রায় ৬ মাস আগে লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলা থেকে ফেনী সদর উপজেলার পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নের মাথিয়ারা এলাকায় এসে আনোয়ার মিয়ার কলোনির একটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে থাকতেন ওই দম্পতি। স্বামী নুরুল করিম বাবলু রিকশা চালিয়ে সংসার চালাতেন। কয়েক মাস আগে থেকে স্থানীয় বখাটেরা বাবলুর স্ত্রীকে অনৈতিক প্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন।
মঙ্গলবার দিবাগত রাত ৮টার দিকে স্থানীয় রকি কথা আছে বলে রিকশাচালক বাবলুকে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে যায়। পরে গভীর রাতে বাবলুর শারীরিক অবস্থা খারাপ বলে তার স্ত্রীকে ডেকে নিয়ে যায়।
পরে তারা কলোনীর পাশে একটি নির্মাণাধীন বিল্ডিংয়ে নিয়ে বাবলুর স্ত্রীর কাছে চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দিলে বাবলুকে মারধর করে মাদক দিয়ে পুলিশে দেয়ার ভয় দেখায়। এক পর্যায়ে কামরুল, মহিন ও রকি ভয়ভীতি দেখিয়ে ওই গৃহবধূকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে।
ভুক্তভোগীর স্বামী বাবলু জানান, রাতভর বখাটেরা আমাকে আটকে রেখে মারধর করে। সকালে তাদের থেকে ছাড়া পেয়ে বাসায় আসলে আমার স্ত্রীর সাথে যা হয়েছে জানতে পারি। আমি এর বিচার চাই।
ভুক্তভোগী নারী জানান, আমি ২ সন্তানের জননী। তারা এলাকার প্রভাবশালী। তারা কয়েক মাস ধরেই আমাকে নানাভাবে কু-প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। মঙ্গলবার দিবাগত রাতে আমাকে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে আমার স্বামীকে অন্যত্র আটক করে ভয় দেখিয়ে আমাকে ধর্ষণ করেছে। আমি বখাটেদের বিচার চাই। আমি রাষ্ট্রের কাছে নিরাপত্তা চাই।
দিকে প্রধান অভিযুক্ত কামরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি যুবদলের সাথে সম্পৃক্ত রয়েছি। বিগত ১৫ বছর কমিটি গঠন না করায় কোনো পদবীতে নেই। আমাদের দলীয় প্রতিপক্ষের লোকজন আমাকে হেয় করতে এ ষড়যন্ত্র করেছে। ঘটনাস্থলের ভিডিওতে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি দেলু চেয়ারম্যানের ভাতিজা ও তার সহযোগীদের সিসি টিভিতে দেখা যাচ্ছে। তাদেরকে অভিযুক্ত না করে ষড়যন্ত্র করে আমাকে অভিযুক্ত করে হয়রানি করা হচ্ছে।’
ফেনী জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নঈম উল্লাহ চৌধুরী বরাত বলেন, পাঁচগাছিয়ার মাথিয়ারায় কামরুল নামে যুবদলের কোনো কর্মী নেই। তারপরও বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখব।
ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সামসুজ্জামান জানান, পালাক্রমে ধর্ষণ ও নির্যাতনের বিষয়ে ভুক্তভোগী নারী থানায় অভিযোগ জমা দিয়েছেন। ভিকটিমকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। এ বিষয়ে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Social Plugin